সুশীল মুসলমান ভাই-বোনদের জন্য চিন্তার খুড়াক
– সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী
প্রথমে তারা বললেন, বিতর নামাজ এক রাকায়াত। উলামায়ে কেরাম প্রতিবাদ করলেন৷ আপনারা উল্টো সেই উলামায়ে কেরামকেই ভুল বুঝলেন। এক রাকাত বিতর পড়া ফজরের আশংকা থাকলে জায়েজ। এটা উলামায়ে কেরামও মানেন। কিন্তু সর্বোত্তম হচ্ছে, ৩ রাকাত বিতর আদায় করা।
এখন সেই মৌলভি সাহেবরাই বলছেন, বিতর নামাজ প্রতিদিন পড়তে হয় না৷ এখনো উলামায়ে কেরাম প্রতিবাদ করছেন। আর আপনারা সেই উলামায়ে কেরামকেই বলছেন তারা অযথা ফিতনা করেন, মানুষের গীবত করেন। আজব!
ভাল ও মন্দ বুঝার মানদন্ডে আমাদের ক্যানসার হয়ে গেছে।
যদিও আমি যেকোনো পরিস্থিতিতেই মানুষের গায়ে হাত তোলার ঘোর বিরোধী, কিন্তু সকল মানুষের বিবেক বিবেচনা তো এক রকম না। কিছু কিছু মানুষ হাত তুলবে তো কদিন পর পর এমন বিষাক্ত কথাবার্তা, ফিতনা ফাসাদ ছড়ালে।
প্রিয় নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিতর নামাজ সফরে থাকাকালীন পর্যন্ত ছাড়তেন না, আর বাড়িতে বসে ছাড়া যাবে বলছে এই মৌলভি। ওই মৌলভি ওএ বলছে প্রতিদিন পড়বেন না।
এজন্যই শহীদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ফারুকি হুজুর এদেরকে নাপিত ডাকতেন। কেটেছেটে ইবাদাত বন্দেগী কমানোই এদের কাজ।
আজ পর্যন্ত কোন মুজতাহিদ ইমামই বিতর নামাজকে সুন্নাহ মুয়াক্কাদার নিচে বলেন নাই। আমাদের হানাফি মাজহাবে বলা হয়েছে ওয়াজিব। অন্যান্য মাজহাবে প্রতিদিন পড়তে হবে এমন সুন্নাহ মুয়াক্কাদা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন পড়তে হবে না, বা পড়বেন না, মায়াজাল্লাহ আস্তাগফিরুল্লাহাল আজিম এমন জঘন্য কথা কোন ইমাম বলেন নাই।
কদিন আগেই বলল কোটিপতি যদি কুরবানী না করে কোন অসুবিধা নেই।
আমরা কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক প্রতিবাদ করলে উল্টো আমরাই দোষী হয়ে যাই। আজব আমাদের সুশীল মুসলমানদের চিন্তাচেতনা।
আল্লাহর ইবাদাত বন্দেগীর সাথে এমন এলার্জি এদের যা ভয়ানক। এগুলোই আসলে প্রমাণ করে তাদের ইমানের হাল।
নিন আহলে হাদিসদের তৈরি করা আল হাদিস এন্ড্রয়েড এপ্স থেকে কয়েকটি হাদিস দিলাম। হুজুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে ও বাড়িতে কখনোই বিতর ত্যাগ করতেন না। প্রয়োজনে সওয়ারীর উপরে পড়েছেন৷ কিন্তু ত্যাগ করেন নাই৷
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : أَوْصَانِي خَلِيلِي صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثَلَاثٍ لا أَدَعُهُنَّ فِي سَفَرٍ وَلا حَضَرٍ رَكْعَتَيِ الضُّحَى وَصَوْمِ ثَلاثَةِ أَيَّامٍ مِنَ الشَّهْرِ وَأَنْ لا أَنَامَ إِلا عَلَى وِتْرٍ .
صحيح سنن أبي داوود 1269 .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বন্ধু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি কাজের ওয়াসিয়াত করেছেন, যা আমি সফরে কিংবা বাড়িতে থাকাকালেও পরিহার করি না। তা হলো : চাশতের দু’ রাকা‘আত সলাত, প্রতি মাসে তিন দিন (১৩,১৪ ও ১৫ আওয়ামে বিযের) সওম পালন এবং বিতর আদায় না করা পর্যন্ত না ঘুমানো।
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম, এ কথা বাদে : সফরে কিংবা বাড়িতেও নয়।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৪৩২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD
2- عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي فِي السَّفَرِ عَلَى رَاحِلَتِهِ حَيْثُ تَوَجَّهَتْ بِهِ يُومِئُ إِيمَاءً صَلاةَ اللَّيْلِ إِلا الْفَرَائِضَ وَيُوتِرُ عَلَى رَاحِلَتِهِ .
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে ফরয সালাত ব্যতীত তাঁর সওয়ারী হতেই ইঙ্গিতে রাতের সালাত আদায় করতেন সওয়ারী যে দিকেই ফিরুক না কেন। আর তিনি বাহনের উপরেই বিত্র আদায় করতেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১০০০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD
وفي رواية : وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسَبِّحُ عَلَى الرَّاحِلَةِ قِبَلَ أَيِّ وَجْهٍ تَوَجَّهَ وَيُوتِرُ عَلَيْهَا غَيْرَ أَنَّهُ لا يُصَلِّي عَلَيْهَا الْمَكْتُوبَةَ .
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) সফরকালে রাতের বেলায় সওয়ারীর উপর থাকা অবস্থায় সালাত আদায় করতেন, কোন্ দিকে তাঁর মুখ রয়েছে সে দিকে লক্ষ্য করতেন না এবং ইব্নু ‘উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারীর উপর নফল সালাত আদায় করেছেন, সওয়ারী যে দিকে মুখ ফিরিয়েছে সে দিকেই এবং তার উপর বিত্রও আদায় করেছেন। কিন্তু সওয়ারীর উপর ফরজ সালাত আদায় করতেন না।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১০৯৮
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ,
আল্লাহ পাক এই ফিতনাবাজ মৌলভিদেরকে হেদায়াত দান করুন৷ আমিন।