উসমানী সম্রাজ্যের সর্বশেষ সুলতান ছিলেন সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ খান। তিনি সর্বজ্ঞানের অধিকারী ও একজন যোগ্য সুলতান কিংবা ইসলামী বিশ্বের সর্বেশ খলীফা ছিলেন। তবে সুলতান আব্দুল হামিদ খান (র.) এর সব চেয়ে বড় পরিচয় হলো তিনি একজন ধর্মভীরু সুলতান ছিলেন।
তখনকার যোগে মুসলিমরা হজ করতে যাওয়ার সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতো। একেই তো অনেক লম্বা সময় নিয়ে হজে যেতে হতো। এছাড়াও বিভিন্ন দস্যুদের আক্রমণের শিকার হতো। এতে করে হজ যাত্রীগণ টাকা পয়সা এবং অনেকের প্রাণ হারাতে হতো।
এসব থেকে হজ যাত্রীদের মুক্তি দিতে এবং কম সময়ে যাতে হজ্বে যাওয়া যায় সেই জন্য সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ খান রেললাইন করার সিদ্ধান্ত নিলেন। ইস্তাম্বুল থেকে শাম এবং শাম থেকে হেজাজ বর্তমান মক্কা ও মদিনা পর্যন্ত এই রেললাইন তৈয়ারি করেন। যাতে করে মুসলিমরা নিশ্চিন্তে ও কম সময়ে হজ্ব পালনে যেতে পারেন। সুলতানের এই রেল প্রকল্প নিয়ে বিশাল বড় ইতিহাস আছে তবে আমি সেদিকে যাচ্ছিনা।
তিনি এমন একজন খলিফা ছিলেন, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে মুসলিরা নির্যাতিত হতো তিনি সেখানেই প্রতিবাদ করতেন। একবার হল্যান্ডের রাজা বসনিয়ার মুসলিমদের কে ইবাদত করতে বাধা দেওয়া শুরু করেছিল, মুসলিমদেরকে হজ্বে যেতে দিতোনা। এবং কি মসজিদ মাদ্রাসা গুলো বন্ধ করে করে দিতো। প্রকাশ্যে মুসলিমদের উপর অত্যাচার করতো। এ খবর পাওয়ার সাথে সাথে সুলতান হল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কে তলব করলেন এবং রাজাকে এসব বন্ধ করতে বললেন। যদিও প্রথমে হল্যান্ডের রাজা এসব বন্ধ করতে রাজি হননি কিন্তু পরবর্তীতে সুলতানের রাজনৈতিক চালে আটকা পরে এসব বন্ধও করেছে এবং তাদেরকে স্বাধীন ভাবে ইসলাম চর্সার অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে।
একদিন সুলতানের নিকট খবর আসলো প্যারিসে আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (দ.) কে বেঙাক্ত করে বানানো একটি ড্রামা সেখানকার থিয়েটারে প্রদর্শিত হবে। যেটি মূলত মুসলিম বিশ্বের জন্য খুবই লজ্জা কর হতো। সুলতান আব্দুল হামিদ খান খবরটি শুনে তাৎক্ষনিক ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত কে তলব করলেন। এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত কে সেই ড্রামা প্রদর্শন না করতে বলেন। কিন্তু ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ঐ মুহর্তে সেটি বন্ধ করা সম্ভব না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
সুলতান রেগে গিয়ে তার প্রধান উজিরকে বললেন সমস্ত মুসলিম সেনাদেরকে প্রস্তুত করতে। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ গোষণা করেছেন।
তিনি বলেন তারা (ফ্রান্স ) আমাকে অবমাননা করুক, আমাকে হত্যা করুক, তবুও আমার প্রিয় নবী (দ.) কে যেন অপমান না করে। অন্তত আমি জীবিত থাকতে সহ্য করতে পারবো না। আমার জীবনের মূল্যে হলেও রাসূল (দ.) এর অবমাননা বন্ধ করতে হবে।
ফ্রান্সের বিরুদ্ধের সুলতানের যুদ্ধ প্রস্তুতির কথা শুনে ফ্রান্স তাৎক্ষণিক সেই ড্রামা প্রদর্শন বন্ধ করে দেয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পরে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে। দেশে দেশে মুসলিমরা আনন্দ মিছিল করেছে। বিভিন্ন মুসলিম দেশের রাজা এবং ইউরোপের মুসলিম সংঘঠন গুলো থেকে শুভেচ্ছা বার্তা আসতে থাকে।
আজ দেখুন ? ফ্রান্সে প্রিয় নবী (স.) কে নিয়ে অবমানোনকর কার্টুন প্রদর্শিত করে। অথচ মুসলিম নেতারা চুপচাপ। যারা আমার রাসূল (সা.) কে ব্যাঙ্গাক্ত করে মুসলিম নেতারা তাদের সাথেই উঠবস করে। জেরুজালেম ইহুদিরা দখল করছে। অথচ কিছু মুসলিম দেশ তাদেরকে সেল্টার দিচ্ছে।
আজ মুসলিম বিশ্ব সুলতান আব্দুল হামিদের মতো নেতা খুঁজছে। সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবির মতো যুদ্ধ খুঁজছে।
আজ সুলতান আব্দুল হামিদের মতো একজন নেতা নেই বলে মুসলিমরা মার্ খাচ্ছে সারা বিশ্বে। হায়েনার দলের মুসলিমদের মধ্যে যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়ে রাখছে। মুসলিমরা এক জন আরেকজনের রক্ত জড়াচ্ছে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এসব বুঝার তৌফিক দান করুক। এবং শিগ্রই সুলতান আব্দুল হামিদ খানের মতো একজন ধর্মভিরু সাহসী নেতা আমাদের জন্য পেরোন করুক।