কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার জয়নাল আবেদীন (জনু মেম্বার) গত ১০ সেপ্টেম্বর রোজ বৃহস্পতিবার মৃত্যু বরণ করেন।তাঁর মৃত্যু উক্ত ওয়ার্ডের মেম্বার পদটি শূণ্য হয়ে যায়। জনতার এই মেম্বারের মৃত্যুতে চান্দিনা উপজেলার বিভিন্ন আদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক নেতাদের ফেইসবুক স্ট্যাটাস,রিয়েক্ট ও শেয়ারের মাধ্যমে সক্রিয় দেখা যায়।তা যেন জনু মেম্বারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ যেন কৌশলে সম্ভাব্য মেম্বার পদপ্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারনা।
সরজমিনে প্রত্যক্ষ সাক্ষাতের আলাপচারিতা জয়নাল আবেদীন জনু মেম্বার সাহেবের জীবিত ও মৃত দুই অবস্থায় কামারখোলা গ্রামের সম্ভাব্য ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার পদপ্রার্থীদের নামের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। মজার ও হাসকর বিষয় হলো তারা সবাই কামারখোলা গ্রামের একই পাড়ার প্রায় একই বাড়ির।তাদের মধ্যে একজনকে অনেক আগ থেকে গ্রামবাসী মেম্বার সাহেব বলে ডাকেন।তিনিও বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনেক আগ থেকে কৌশলে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।যেমন, লোকবল সহ প্রায় ভোট কেন্দ্র মুখী শোডাওন,লোকবল সহ গ্রামে গ্রামে সকাল বিকাল যাতায়ত,ইদে পূজায় শুভেচ্ছা বিনিময় ও দোয়া প্রার্থী।
এই দলের আরও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।তিনিও কৌশলে দোয়া ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা সরাসরি ছবি পোস্ট করে আগামীর মেম্বার পদপ্রার্থীতার জানান দিয়েছেন।এই সম্ভাব্য মেম্বার পদপ্রার্থীর এই গ্রামের উপজেলা পর্যায়ের নেতার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যা অন্যান্য সম্ভাব্য মেম্বার পদপ্রার্থীর চেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন বলে এলাকাবাসী বিশ্বাস করে।
কামারখোলা গ্রামের দীপ্তমান সূর্য সন্তান যে গোষ্ঠী তে জন্ম নিয়েছে ঐ গোষ্ঠীতেও পরবর্তী স্থানীয় নির্বাচনের মেম্বার প্রার্থীতা জানান দিয়েছেন। তাই তিনিও বিষয়টি নিয়ে আশাবাদী।
এই দিকে জয়নাল আবেদীন জনু মেম্বার সাহেবের বড় ছেলে মোঃ আবুল বাসার আগ থেকেই গ্রামবাসীকে জানিয়েছেন আমার বাবা যতদিন বেঁচে আছেন,এই গ্রামের মেম্বার প্রার্থী আমি কিভাবে হবো,তবে আল্লাহ এমন না করুন বাবা মারা গেলে আমি মেম্বার পদে পরবর্তী স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হব।আজ ওনার বাবা বেঁচে নেই তাই পরবর্তী স্থানীয় নির্বাচনে ওনার গ্রামবাসীর দেওয়া ওয়াদা রাক্ষায় পরবর্তী স্থানীয় নির্বাচনে মেম্বার পদে প্রার্থী হবেন।
বাংলাদেশের সকল যোগ্যতা সম্পন্ন নাগরিকের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া সাংবিধানিক অধিকার। তাই বলে একই গ্রামের একই পাড়ার ডজন খানেক ব্যক্তির মেম্বার পদে প্রার্থী হবার যে অপচেষ্টা তা কঠিন হাতে প্রতিহত করতে হবে।তা না হলে আমাদের গ্রামীণ সমাজ ব্যবস্থায় পূর্বের মুরব্বিদের যে রেখে যাওয়া সমাজ তা আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। এখান থেকে আমাদের সমাজকে আগের দিকে নিতে হলে ও আর উন্নত করতে হলে এই মেম্বার পদে প্রার্থীতার দোয়া ও শুভেচ্ছা বিনিময় বন্ধ করতে হবে। তবে সম্পূর্ণভাবে সকলেরটি নয়,যাদের সমাজ সেবক হবার গ্রহণ যোগ্যতা আছে শুধু তারাই সম্ভাব্য মেম্বার পদপ্রার্থীতা জানান দিতে পারবে।
এই ধরনের সম্ভাব্য মেম্বার পদপার্থীদের ইদ/পুজার
শুভেচ্ছা বিনিময় ও দোয়া প্রার্থী প্রচারনা গ্রামের পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় নিবিড় সম্পর্ক সহ গ্রাম বাংলার চিরাচরিত প্রতিবেশি শুলব মনোভাব কে নষ্ট করে দেয়।এই সমস্যা শুধু কামারখোলা গ্রামের নয়, বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামের একই ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা।
জনপ্রতিনিধি হওয়া সহজ কথা নয়,
অযোগ্যে লোকের জনপ্রতিনিধি হওয়ার
মনোভাসনার জন্ম যাতে মনেতে না হয়।
লেখক/মোঃ খোরশেদ আলম
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস,বেরোবি,রংপুর
সাবেক অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র, জাবি।