সামাজিক দূরত্ব ও ইসলামী বিধি মেনেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ইস্তাম্বুল দুর্দান্ত উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। শহরটির গভর্নর আলী ইয়ারলিকায়া গতকাল (বৃহস্পতিবার) বলেছেন: আমরা জানি – আমাদের দর্শনার্থীদের হাজিয়া সোফিয়ায় নামাজ পড়ার সবচেয়ে বড় ইচ্ছা। আর তা সঠিকভাবে পূরণে প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেয়া হচ্ছে। মসজিদটি সকাল ১০টায় দর্শণার্থীদের জন্যে খুলে দেয়া হবে এবং পরদিন সকাল পর্যন্ত খোলা থাকবে যেনো প্রত্যেকেই নামাজের জন্যে পর্যাপ্ত সময় পান। প্রচণ্ড ভীড়ের জন্যে নামাজ পড়ার পাঁচটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলোর দুটি মহিলাদের জন্যে। সামাজিক দূরত্বের নিয়ম লঙ্ঘন না করে প্রত্যেকের নামাজ পড়ার জন্যে পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ১১টি চেক পয়েন্ট দিয়ে কঠোর নিরাপত্তার সাথে সেখানে প্রবেশ করতে হবে। দ্রুত ও সহজে মসজিদে প্রবেশের জন্যে আমরা দর্শণার্থীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছি। তারা যেনো কোনো ধরণের ব্যাগ না নিয়ে আসেন। দর্শনার্থীদের তাপমাত্রাও পরীক্ষা করা হবে এবং মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক থাকবে। ১৭টি স্বাস্থ্য পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে – যেখানে ৭৩৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী ১০১টি গাড়ী ও একটি হেলিকপ্টারের সমন্বিত একটি অ্যাম্বুলেন্স ইউনিটের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করবেন। বড় জনসমাগমের কারণে কিছু রাস্তাও বন্ধ রাখা হবে। ইস্তাম্বুল মেট্রোপলিটন মিউনিসিপ্যালিটিও (আইবিবি) ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। মসজিদে যাতায়াতের জন্যে ২৫টি শাটালার ট্রেন ফ্রি করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও, এ এরিয়াতে পার্কিং ফ্রি করা হয়েছে। মিউনিসিপ্যালিটি কর্তপক্ষ ২৫ হাজার পানির বোতল, মাস্ক, জীবাণুনাশক ও জায়নামাজ সরবরাহের পরিকল্পনা করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রায় ১,৫০০ লোক জুমার নামাজে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশী-বিদেশী পর্যটকদের জন্যে তুরস্কের সর্বাধিক দর্শনীয় স্থানগুলির মাঝে হাজিয়া সোফিয়া অন্যতম।
হাজিয়া সোফিয়া ৯১৬ বছর টানা চার্চ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর ১৪৫৩ সাল থেকে শুরু করে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বছর ধরে এটি মসজিদ হিসেবেই পরিচিত ছিলো। এরপর ৮৬ বছর ধরে তা জাদুঘর হিসেবে পরিচিত ছিলো। ১৯৮৫ সালে যাদুঘর হিসেবে এটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকাযর অন্তর্ভুক্ত হয়।
চলতি মাসের ১০ তারিখে তুর্কি আদালতের রায়ে ১৯৩৪ সালের তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদের জাদুঘরে রূপান্তরের আদেশটি রহিত করায় হাজিয়া সোফিয়াকে পুনরায় মসজিদ হিসেবে চালু করতে আর কোনো বাধা থাকেনি। মসজিদে পুনঃরূপান্তরের পর, ১৬ই জুলাই তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর এটি পরিচালনার জন্যে সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাথে একটি সহযোগিতা চুক্তি করে। এ চুক্তির অধীনে দেশটির সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এটির সংস্কার ও সংরক্ষণের কাজ তদারকি করবে এবং ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর ধর্মীয় সেবা তদারকি করবে।
সূত্র: ডেইলি সাবাহ।