মাঝরাতে অকারণেই ঘুম ভেঙে গেলো,ঘরে কেমন ঠান্ডা বাতাস লাগছে।মনে হয় কাছে পিঠে কোথাও বৃষ্টি হয়েছে,তার আমেজ বইছে এদিকটায়।নাহ,জোর করেও আর চোখটা বন্ধ করা যাচ্ছে না।কখন যে বারান্দার দরজা খোলা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম,কে জানে;বন্ধ করে আসা দরকার, নয়তো বসন্তের আচমকা বৃষ্টিতে ছাঁট এসে রুম অবধি ভিজে যাবে।
আড়মোড়া ভেঙে বারান্দার কাছে যেতেই দেখলাম,লনের উপর শিউলি গাছটার নিচে শুভংকর মগ্ন হয়ে হাঁটছে!অবাক হলাম সাথে ভয়ও পেলাম বৈকি।রাত তিনটায় ও এখানে কেনো! তবে বেশ লাগছে আজকে ওকে,সাদা পাঞ্জাবিটায় দারুণ মানিয়েছে কিন্তু। শেষবার ওকে দেখেছিলাম, শীতের শেষে কালো চাদরে নিহাররঞ্জনের চায়ের দোকানে। সেদিন সকালে চায়ের কাপে বেশ গল্প হয়েছিলো ওর সাথে। হঠাৎ মনে হলো শুভংকর আমায় ডাকছে।
বাগানবাড়ির পরিত্যক্ত লনটাকে কেন যেনো প্রচন্ড অপরিচিত মনে হচ্ছে, ঠিক যাচ্ছে না আমার পুরোনো স্মৃতির সাথে, শিউলি গাছটাকে কেমন পৈশাচিক লাগছে! অথচ সেদিনও মেজদির সাথে খুব ভোরে শিউলি কুড়াতে গিয়েছিলাম; লনের ঘাসগুলো কেমন যেন সবুজকালচে হয়ে আছে।
যাইহোক শুভংকরের সাথে কথা বলা দরকার, দিনদিন ওর মাথাটা আরও বিগড়ে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে লনের ঘাসের উপর পা দিয়ে এগোলাম। কাছে গিয়ে দেখলাম, অনেক শিউলি ঝরে আছে। আরেকটু কাছে গিয়ে দেখি, এতো শুভংকর নয়, লনের সাদাল্যাম্পপোস্টের আলোতে গাছের নিশ্চুপ শিউলি আর ঝরে পড়া শিউলি মিলে সাদা পাঞ্জাবির শুভংকরের ঘোর হয়ে দেখা দিয়েছিলো আমার অপার্থিব মস্তিষ্কে! চারিদিকে শো শো বাতাস বয়েই, ঝরঝরিয়ে বৃষ্টি নামলো। প্রচণ্ড তীক্ষ্ণ বৃষ্টিতে আমার সবুজ শাড়ি ভিজে লনের অন্ধকার ঘাসের সাথে মিশে যাচ্ছে, কানে কি একটা নরম কিছু অনুভূত হলো।শুভংকর ফাঁকি দিয়েছে ঠিকই কিন্তু যাওয়ার বেলায় একটা নরম সাদা শিউলি কানে গুঁজে দিয়ে গিয়েছিলো! অকালের বসন্ত বৃষ্টিতে কান থেকে শিউলি ফুলটা ঝরে অন্ধকারের সবুজকালো ঘাসে মিলিয়ে গেলো! সাদা ল্যাম্পপোস্টের আলোতেও আর খুঁজে পাওয়া গেলো না!
ভালো লিখেছেন, তবে আরো কিছু এড করে লিখাটা বড় করলে ভালো হতো।