শালবন বিহার বাংলাদেশের কুমিল্লার ময়নামতিতে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।
মূলত এটি ভবদেব বিহার নাম পরিচিত ছিল, পরবর্তীতে শাল নামক গাছের নাম অনুসারে এর নাম করণ করা হয় শালবন বিহার।
১২০০ বছর আগে রাজা ভাবা দেব, আদি-দেববংশের চতুর্থ শাসক ১৬৮ বর্গমিটার জমিতে এই জায়গাটি তৈরি করেছিলেন। এটি প্রাথমিক বৌদ্ধ শিক্ষার্থীদের জন্য রাজপ্রাসাদ ছিল। মানুষ এটিকে আগেরকার দিনে শালবন রাজার বাড়ি নামে ডাকতো। স্থানটি খননের পরে সেখানে পোড়ামাটির সিল ও তামার তৈয়ারি বৌদ্ধদের ব্যবহৃরিত জিনিসপত্র পাওয়া গেলে এটিকে শালবন বিহার নাম দেওয়া হয়।
ধারণা করা হয় এর আগের নামটি রাখা হয়েছিল দেব বংশের চতুর্থ রাজার পরের রাজা ভবদেবের নাম অনুসারে। তিনি সম্ভত ৭ম শতাব্দী বা ৮ম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়কালে শাসন পরিচালনা করেছিলেন। এটি লালাম্বি বনের সীমানা রাজধানী দেবপর্বতের অভ্যন্তরে বা এর বাইরে নির্মিত হয়েছিল।
এটি কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার অদূরে, ময়নামতি – লালমাই সীমানার নিচু পাহাড়ি অঞ্চলের বিস্তৃত স্থান জুড়ে ৮ম শতাব্দীতে প্রায় ৫০টি স্থাপনা গড়ে উঠেছিল। প্রায় ১১৫টি ছোট কক্ষ দ্বারা বেষ্টিত এবং মাঝখানে একটি প্রশস্ত উঠোন ও মন্ধির সহ এটি নির্মিত হয়েছিল। শালভান বিহারের প্রায় ৫ কিলোমিটার উত্তরে কুটিলা মুরা, যা এক অনন্য বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানের মনোরম প্রতীক।
Shalban Bihar – Photo Source: BD Travel
এটি একসময় একটি স্ব-সংযুক্ত বৌদ্ধ বিহার ছিল যেখানে সন্ন্যাসী বাস করতেন, পড়াশোনা ও প্রার্থনা করতেন। এটি প্রাথমিক বৌদ্ধ শিক্ষার্থীদের জন্য রাজবাড়ী ছিল। বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের ধ্যান এবং ধর্মীয় শিক্ষার জন্য এখানে আসে। তাদের অধ্যয়নের সময়কালে, শিক্ষার্থীরা মন্দিরের আশপাশে ছাত্রাবাস / কক্ষ গুলুতে থাকত। এটি একটি অনুর্বর অরণ্যের অভ্যন্তরে একটি নিরবিল শান্তিপূর্ণ জায়গা এবং এটি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পর্যটন স্পট।
শালবন বিহারের স্থাপনা গুলো একসাথে নির্মিত হয়নি, এর এক একটি এক এক সময় নির্মাণ করা হয়েছিল। তারা সনাতন বৌদ্ধ স্তূপ স্থাপত্যের হিন্দু মন্দিরের বিবর্তন এবং ধীরে ধীরে রূপান্তরের আকর্ষণীয় প্রমাণ সরবরাহ করে। প্রথম দুটি যুগের ধ্বংসাবশেষ তৃতীয় যুগের ক্রুশফর্মের স্থাপনার নীচে লুকানো রয়েছে যা আলাদা ভাবে আশ্রমটির সাথে নির্মিত হয়েছিল।
জানা যায় যে এটি শালবন বিহার খননের সময় অনেক মূল্যবান সামগ্রী পাওয়া যায়। তন্যধ্যে ৭টি তামার প্লেট ও শিলালিপি, ৩৫০ টি স্বর্ণ, এবং অসংখ পরিমান রুপা ও পোড়ামাটির ভাস্কর্য সহ অনেকে রকমের মূলবান সামগ্রী পাওয়া গিয়েছে।
Shalban Bihar Photo Source: Asian Age
nice feature